পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া গেল ৯ কোটি ১৭ লাখ
আপলোড সময় :
১৩-০৪-২০২৫ ০৯:১৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
১৩-০৪-২০২৫ ০৯:১৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
এবারও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্স থেকে পাওয়া গেছে রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। এটি চার মাসে এই মসজিদের দান সিন্দুকে থেকে পাওয়া সবচেয়ে বেশি টাকা। নগদ টাকা ছাড়াও মিলেছে বিপুল পরিমাণ বিদেশী মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার।
শনিবার (১২ এপ্রিল) টনা ১০ ঘণ্টা ধরে গণনা শেষে এই টাকার পরিমাণ জানা যায়। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতবছরের ৩০ নভেম্বর সব শেষ পাগলা মসজিদে লোহার সুন্দর খোলা হয়েছিল তখন পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা।
এর আগে শনিবার সকালে মসজিদের ১১টি লোহার সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ২৭ বস্তা টাকা। আর এসব টাকা গণনায় অংশ নেন ব্যাংকের ৬০ কর্মচারিসহ ৪৭০ জন মানুষ।
ভোর থেকে বড় বড় লোহার সিন্দুক থেকে বের করে আনা হচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। আছে সোনাদানাসহ বিদেশি মুদ্রাও। বস্তায় ভরে এসব টাকা নেয়া হচ্ছে মসজিদের দ্বিতীয় তলায়। সেখানে চলছে গণনার কাজ।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীসহ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের নিচতলায় বিভিন্ন স্থানে থাকা দানসিন্দুকগুলো একে একে খোলা হয়। এরপর বস্তাভর্তি টাকা নেয়া হয় মসজিদের দ্বিতীয় তলায়। মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় টাকা গণনার কাজ।
দানবাক্সে পাওয়া ২৮ বস্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নেয় পাগলা মসজিদ নূরানি কুরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১০০ জন শিক্ষার্থী, জামিয়াতুল ইমদাদীয়ার ২'শ শিক্ষার্থী, রুপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ তিন শতাধিক মানুষ। গণনা শেষে সেনা ও পুলিশ প্রহরায় ধাপে ধাপে টাকা পাঠানো হয় রুপালী ব্যাংকে।
টাকা গণনা কাজে দিনভর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়। এর আগে সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট মসজিদের দানসিন্দুক থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। এবার আরও একটি দানসিন্দুক বাড়ানো হয়েছে। দানের টাকা জমা রাখা হয় মসজিদের নামে খোলা ব্যাংক একাউন্টে। এ টাকা দিয়ে প্রায় ১১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে বহুতল পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চরে। ওই পাগল সাধকের মৃত্যুর এখানে নির্মিত মসজিদটি পাগলা মসজিদ হিসেবে পরিচিতি পায়। পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
টাকা গণনা শেষে পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, মসজিদের আয় থেকে জেলার আর্ত মানবতার সেবায় কিছু টাকা ব্যয় করা হয়। অবশিষ্ট টাকা রূপালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ টাকা দিয়ে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক জানান আনুষঙ্গিক খরচ বাদে এ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা আছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স